বিবাহিত ছাত্রীদের হল ছাড়তে জবির নোটিশে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবাহিত এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে উক্ত হলের প্রভোস্ট কর্তৃক জারিকৃত নোটিশটিকে কেন বৈষম্যমূলক হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও প্রভোস্ট, বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি এ রুল জারি করা হয়।

রুলের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির জারিকৃত নোটিশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের যৌথ হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীর জেন্ডার, বৈবাহিক অবস্থা ও স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিষয়ক প্রচলিত বৈষম্যমূলক সব বিধি-বিধান দূর করে সব শিক্ষার্থীর জন্য আইনের সমতা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে সমান সুযোগ ও বৈষম্যহীনতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি লিঙ্গ অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা প্রণয়নের ‍নির্দেশনা দেন আদালত। পাশাপাশি উক্ত নীতিমালা প্রণয়নে গৃহীত পদক্ষেপ বিষয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখের মধ্যে আদালতে দাখিলের জন্য সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এমন একটি বিজ্ঞপ্তি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ দিতে পারে সেটাই দুঃখজনক। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমন নোটিশ দিয়ে নারীদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।

এ প্রসঙ্গে ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন, এটা বিস্ময়কর যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতি এবং সাংবিধানিক অঙ্গীকার থাকা সত্ত্বেও বিবাহিত এবং গর্ভবতী নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে। আমরা আশা করি, হাইকোর্টের সময়োপযোগী হস্তক্ষেপ নারীর সমান অধিকার অর্জনে এই আইনি বাধাগুলো দূর করতে সাহায্য করবে।

উল্লেখ্য, সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ উইমেন হেলথ কোয়ালিশন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), নারীপক্ষ, সেরাক বাংলাদেশ এবং ব্র্যাক কর্তৃক দায়েরকৃত জনস্বার্থ বিষয়ক মামলা (রীট মামলা নং ১৩৪৭৮/২০২৩) এর প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার এই নির্দেশনা দেন।

আবেদনকারীদের পক্ষে মঙ্গলবার মামলাটি পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন। তাকে সহায়তা করেন আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, এস এম রেজাউল করিম, আয়েশা আক্তার, মো. নাজমুল করিম। তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রিয়া আহসান চৌধুরী। রাষ্ট্র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল অ্যাড. অমিত দাস গুপ্ত।

খবর সারাবেলা / ৩১ অক্টোবর ২০২৩ / এমএম