দহনদিনে রসাল জামরুল

গ্রীষ্মের সুদর্শন ফল জামরুল। তপ্ত দিনে তৃষ্ণা নিবারণে রসে ভরা টসটসে জামরুলের জুড়ি নেই। সারা দেশে ঘন পাতার সন্নিবেশে চিরসবুজ গাছটি চোখে পড়লেও জামরুলের জন্মভূমি কিন্তু এ দেশে নয়, সেই আন্দামান ও নিকোবরে, যেখানে ভারতের স্বাধীনতাকামী রাজবন্দীদের এককালে নির্বাসনে রাখা হত।

দামে সস্তা হলেও জামরুলের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। রসের আধিক্য ও তৃষ্ণা নিবারক গুণ তো আছেই। জামরুল ক্যারোটিন, ভিটামিন বি ও সি-সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম জামরুলে জলীয় অংশ ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ। এ ছাড়া ক্যারোটিন আছে ১৪১ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ দশমিক শূন্য ১ ও বি-২ দশমিক শূন্য ৫ মিলিগ্রাম। এগুলোর পাশাপাশি জেনে নেওয়া যাক জামরুলের অন্যান্য পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা সর্ম্পকে।

জামরুলে রসের আধিক্য ও তৃষ্ণা নিবারক গুণ আছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে: জামরুলে অ্যান্টি হাইপারগ্লিসেমিক নামক উপাদান রয়েছে। যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মিষ্টি কম বলে ডায়াবেটিস রোগীরা জামরুল খেতে পারেন।

ত্বকের যত্নে: জামরুল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জামরুলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম জামরুলে ২২ দশমিক মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি ত্বকের জন্য উপকারী। আর গরমে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখাসহ জামরুল মেদ নিয়ন্ত্রণ করে।

জামরুলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা ত্বকের জন্য উপকারী ক্যানসার প্রতিরোধ করে: জামরুলে থাকা ভিটামিন সি ও ফ্লাবিনয়েড যা ক্যানসার ও হৃদরোগের ক্ষেত্রে কোষের ধ্বংস করতে সহায়তা করে। শরীরের দূষিত পদার্থ দূর করে জামরুলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।

লিভার সুস্থ রাখে: ঔষধি গুণ সম্পন্ন জামরুল লিভার ও মস্তিষ্কের সুরক্ষায় কাজ করে। হেপাটোপ্রটেক্টিভ নামক একটি উপাদান আছে যা লিভার কোষ ধ্বংস থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া জামরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এই ফল চোখের জন্য উপকারী।

জামরুলে থাকা ভিটামিন সি ও ফ্লাবিনয়েড যা ক্যানসার ও হৃদরোগের ক্ষেত্রে কোষের ধ্বংস করতে সহায়তা করে

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা জামরুল খেতে পারেন। জামরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিয়াটরী ফাইবার থাকায় এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। পাশাপাশি পেট ফাঁপা ও ডায়ারিয়া প্রতিরোধ ও শরীরের দূষিত পদার্থ বর্জনে বিশেষ উপকারী।

অন্যান্য: হাড় ও দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের জন্য জামরুল খেতে পারেন। জামরুলে থাকা পটাশিয়াম শরীরের ইলেক্টোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া জামরুল ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা সমাধানেও কাজ করে।

খবর সারাবেলা / ২৮ মে ২০২২ / এমএম