ডলফিন বাঁচলেই অটুট থাকবে জলজ প্রতিবেশ
‘শুশুক ডলফিন থাকে যদি ভালো থাকবে মোদের নদী’ এ শ্লোগানে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ডলফিন রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে ৩০ অক্টোবর চ্যানেল আই ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা বিপন্ন ডলফিন রক্ষায় জনসাধারণদের সচেতন হওয়ার আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ইউএনডিপির প্রোগ্রাম স্পেশিয়ালিস্ট আরিফ মোহাম্মদ ফয়সাল, বাংলাদেশ বন বিভাগের বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির এবং চিত্রনায়ক ফেরদৌস সহ অনেকে।
বক্তরা বিপন্ন ডলফিন রক্ষায় বলেন, জলজ প্রতিবেশের অন্যতম প্রাণী ডলফিন। এরা শুশুক, শিশু ও শিশুমাছ নামেও পরিচিত। দেশের অভ্যন্তরীণ বড় বড় নদী, মোহনা ও সুন্দরবনের নদীগুলোতে এদের দেখা যায়। নদীর মাঝারি গভীরতায় থাকতে এরা পছন্দ করে। ধূসর রঙের এই প্রাণীটির মাথা ছোট ও শরীর বেশ নরম। এদের লক্ষ্যনীয় বৈশিষ্ট্য হলো লম্বা ঠোঁট। ছোট ছোট চোখ দুটি ঠোঁটের উপর অবস্থিত হলেও এরা এটা দিয়ে খুব ভালো দেখতে পায় না। এরা একাকী, জোড়ায় জোড়ায় থাকে এবং মাঝে মাঝে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য পানির উপর উঠতে দেখা যায়। জলজ জীববৈচিত্র্যের ভা-ারকে সমৃদ্ধ করেছে ডলফিন বা শুশুক। এরা জলজ পরিবেশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। যে নদীতে ডলফিন থাকে সেই নদীতে মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং নদীর পরিবেশ সুস্থ থাকে। এদের উপস্থিতি পানির গুণগত মান বা অবস্থা পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। পরিবেশগত প্রভাব বোঝার নির্দেশক এই শুশুকগুলো বর্তমানে ভালো নেই।
বাংলাদেশে এরা বিপন্ন প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত। পৃথিবীজুড়ে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। অপরিকল্পিত বাঁধ তৈরি, মিঠাপানির প্রবাহ কমে যাওয়া, নির্বিচারে হত্যা, মাছ ধরার জালে আটকে পড়ে মৃত্যু-এদের সংখ্যা হ্রাসের অন্যতম কারণ। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, নদীর নাব্য হ্রাস, পাশাপাশি কল-কারখানার তরল বর্জ্যতে পানি দূষণ-এদের বিপন্নতার অন্যতম কারণ। ডলফিন তেলের উপকারিতা নিয়ে লোকজ কুসংস্কারের কারণেও এরা মানুষের হাতে মারা পড়ছে। মিঠা পানির ডলফিন বাঁচলে সুস্থ থাকবে জলের আধার; রক্ষা পাবে অন্যান্য জলজপ্রাণী, সেই সঙ্গে নিশ্চিত হবে টেকসই জলজ প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনা।
খবর সারাবেলা / ৩১ অক্টোবর ২০১৯ / এমএম