রমজানে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেসব খাবার খাবেন

ইসলাম ধর্মের ৫টি স্তম্ভের ৩য় স্তম্ভের নাম হচ্ছে সিয়াম বা রোজা। আরবী বছরের রমজান মাস জুড়ে এই সিয়াম সাধনা করেন মুমিন মুসলমানগণ।বছর ঘুরে আবারও হাজির হয়েছে মাহে রমজান। আর এই পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারদের খাদ্যাভ্যাস, সময়সূচি ও উপাদানে বিশেষ পরিবর্তন আনতে হয়। বেশিরভাগ পরিবারে এ সময় তিনবেলা খাওয়া হয়- ইফতার, রাতের খাবার ও সেহরি। অনেকে আবার দুইবেলা খান। কেউ রাতের খাবার বাদ দেন। আবার কেউ গভীর রাতে সেহরিতে তেমন কিছু মুখে দিতে পারেন না।

তবে অভ্যাসের বৈচিত্র্য থাকলেও সুস্থতার জন্য প্রত্যেকেরই কিন্তু খাবার গ্রহণে ক্যালরি মান বজায় রাখা উচিত। তাই রমজান মাসে খাবারের ব্যাপারে সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। খাবার কতটা মানসম্মত ও স্বাস্থ্যকর- সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। আসুন জেনে নেই রমজানে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার কোনগুলো। আর সুস্থ থাকতে কেমন খাবার পরিহার করা উচিত।

ইফতারের তালিকায় যা রাখবেন

ইফতারের তালিকায় হালকা খাবার রাখা উত্তম। খেজুর, ফল, মুড়ি, লেবুর শরবত অথবা ফ্রেশ ফলের জুস মেন্যুতে রাখতে পারেন। দই-চিঁড়াও রাখতে পারেন। তাছাড়া দই ও কলাও খেতে পারেন।

ইফতারে যতটা সম্ভব তেলজাতীয় খাবার বর্জন করা ভালো। অতিরিক্ত মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার না খাওয়াই উচিত। এছাড়া অতিরিক্ত চা, কফি এবং কোমল পানীয় পান করা থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ তা শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে। তেহারি, বিরিয়ানি, হালিমের মত ভারী খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

ইফতারের তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা পর রাতের খাবার খাবেন। ভাত, সবজি, ডাল, মাছ বা মাংস রাখবেন খাবারের তালিকায়। সবজি ঝোল রান্না করে খাবেন। আঁশযুক্ত খাবার খাবেন। এতে খাবার সহজে হজম হয়।

সেহরিতে যেসব খাবার খাবেন

সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে বলে সেহরিতে খুব বেশি খেতে হবে এমনটা ভেবে পেট পুরে খাবার খাওয়া মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বরং ক্ষুধা নিবারণের জন্য যতটুকু আপনার দরকার ততটুকুই খান। মাত্রাতিরিক্ত খাবার খেলে তা উপকারের পরিবর্তে অপকারই বেশি করবে। এছাড়া সারাদিন অস্বস্থিতে ভুগবেন।

স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ধরণের খাবারই সেহরিতে খাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, খাবারটা যেন সহজপাচ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। ভাত বাঙালির মুখ্য খাবার। তাই সেহরিতে অবশ্যই সাদা ভাত রাখবেন। তবে ভাতের সাথে রাখতে হবে উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, মাংস ও ডিম। খরচ কমাতে চাইলে ভাতের সাথে শুধু ডিম ও ডাল। ডাল উদ্ভিজ প্রোটিন বলে এতে ক্ষতিকর চর্বি নেই।

সেহরির খাবার তালিকায় যেকোনো একটি সবজি রাখা উচিত। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, পেঁপে, করলা, আলু, টমেটো-এর কয়েকটি বা যেকোনো একটি রাখলে চলবে। পাকস্থলীতে অস্বস্তি সৃষ্টি করে- এমন কোনো খাবার খাওয়া উচিত নয়।

যারা ভাত খেতে চান না তারা রুটি-ডাল খেতে পারেন। আঁশযুক্ত খাবারের প্রতি গুরুত্ব দিন। কারণ এই জাতীয় খাবার হজম হতে দেরি হয়। তাই ক্ষুধা লাগে দেরিতে। সমস্যা না হলে হালকা গরম এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন।

সেহরিতে যা খাবেন না

অতিরিক্ত তেল মসলাদার খাবার খাবেন না। খাবার রান্নার সময় অল্প তেল ব্যবহার করবেন। রেড মিট বাদ দিয়ে এসময় মুরগির মাংসের ঝোল খেতে পারেন। গুরুপাক খাবার পরিহার করুন। যাদের ডায়াবেটিস আছে তার মিষ্টিজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন।

খবর সারাবেলা / ০৭ মে এপ্রিল ২০২০ / এমএম