সিজার পরবর্তী সময়ে মায়ের যত্ন

প্রাকৃতিক উপায়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার বিকল্পে বর্তমানে সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সিজার করে সন্তান জন্ম দিতে দেখা যায়। কিন্তু সিজারের পর কি হয়, তা অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। সিজার করে সন্তান জন্ম দিলে চার দিনের মত হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। তারপর বাড়িতে মায়েদের জন্য বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। কারণ এই সময় যদি মায়ের যত্ন ঠিক মত না নেয়া হয় তাহলে ঘটে যেতে পারে যেকোনো রকমের বিপদ।

অনেক মা-ই জানেন না যে সিজার করানোর পরেও যৌনাঙ্গ থেকে রক্তপাত হয়। তবে এই রক্তপাতের পরিমাণ হবে সীমিত। খুব বেশি রক্তপাত, অতিরিক্ত দুর্গন্ধ এবং গাড় রঙের রক্ত যাচ্ছে কি না সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে হবে, কারণ এগুলো ইনফেকশনের প্রধান কারণ। সিজার করার পর আরও কিছু ব্যাপারে জেনে রাখা ভালো:

সিজার করানোর পর একটি ক্যাথেটার ব্যবহার করা হতে পারে তার শরীরে। এটা শুধু প্রথম দিনেই রাখা হয়। পরের দিন খুলে ফেলা হয়। সেলাইয়ের দাগটা থেকে যায় অনেকদিন, অনেক বছর পর্যন্ত। তবে সময়ের সাথে তা অনেক হালকা হয়ে যায়, আগের মতো উঁচুও হয়ে থাকে না। অপারেশনের পর এই কাটা দাগ শুকাতে দিতে হবে কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ। পুরো শুকিয়ে গেলে তারপরেই কেবল দাগ দূর করার জন্য তেল মালিশ বা দাগ দূর করার ক্রিম লাগানো যেতে পারে।

সিজার করা বেশ বড়সড় একটা অপারেশন সুতরাং অনেকেই এই অপারেশনের পর টয়লেটের কাজ সারতে ভয় পান। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রয়োজন হলে ডাক্তার কিছু ওষুধ দেবেন যা সহজে টয়লেটের কাজ সারতে সাহায্য করবে। সিজারের পর রক্ত জমাট বাঁধার ভয় যেন না থাকে তার জন্য পরের দিন হালকা হাঁটাচলা করাটা ভালো।

শরীর থেকে অ্যানেসথেসিয়ার প্রভাব কেটে যাবার সময়ে অনেকের কাঁপুনি দেখা যায়। শরীরের নিচের দিকে বিশেষ করে পায়ে অসাড়তা অনুভব হতে পারে। তবে কয়েক ঘন্টার মাঝে এই অনুভূতি কেটে যাবার কথা। প্রাকৃতিক-ভাবে সন্তান জন্ম না দিলেও রক্তপাত হবেই। একে বলা হয় পোস্টপারটাম ব্লিডিং। এটা খুব বেশি হলে ছয় সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। বাচ্চার চাইতে ভারী কিছু আপনি তুলতে পারবেন না প্রথম ২-৩ সপ্তাহ। ৪-৬ সপ্তাহ ব্যায়াম বন্ধ। আর শারীরিক সম্পর্ক বন্ধ রাখতে হবে প্রথম ছয় সপ্তাহ।

সার্জারির পর হাঁচি-কাশি দিতে গেলে পেটে ব্যথা লাগতে পারে। এ সময়ে পেটের ওপর বালিশ চেপে ধরে রাখলে ব্যথা কম হবে। অনেকেই এ সময়ে বেল্ট পরে থাকেন। এই বেল্টও ব্যথা কমাতে সহায়ক। প্রথম সপ্তাহে এই সমস্যা বেশি হবে পরে কমে যাবে।

খবর সারাবেলা / ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ / এমএম