সি আর দত্তের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) চিত্ত রঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) বীর উত্তমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ খান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁরা সি আর দত্তের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ খান মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় বলেন, বীর উত্তম সি আর দত্ত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের একজন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন তাঁর স্মৃতি অম্লান থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে সি আর দত্তের অনন্য অবদান দেশ ও জাতি চিরদিন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
আজ মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সি আর দত্ত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
চিত্ত রঞ্জন দত্ত বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সি আর দত্ত বার্ধক্যজনিত নানা দুরারোগ্য রোগে ভুগছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় তার মেয়ের বাসায় ছিলেন। মেয়ে কবিতা দাশগুপ্তের বাসায় হঠাৎ গত শুক্রবার তিনি বাথরুমে পড়ে যান। অজ্ঞান অবস্থায় তাকে ফ্লোরিডার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। পরে তাকে ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়।
সি আর দত্তের সৎকার কোথায় হবে সে ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে লাশ কবে আসবে, লাশ আনা সম্ভব হলে বাংলাদেশে কোথায় সমাধি হবে এসব বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান রানা দাশ গুপ্ত।
প্রসঙ্গত, সি আর দত্তের জন্ম ১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি আসামের শিলংয়ে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম উপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত এবং মায়ের নাম লাবণ্য প্রভা দত্ত।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট ডাউকি সড়ক পর্যন্ত এলাকা নিয়ে ৪ নং সেক্টর গঠন করা হয়। এই সেক্টরের কমান্ডার নিযুক্ত হন সি আর দত্ত। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি বীর-উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। এ ছাড়া ঢাকার কাঁটাবন থেকে কারওয়ান বাজার সিগন্যাল পর্যন্ত সড়কটি ‘বীর-উত্তম সি আর দত্ত’ সড়ক নামে নামকরণ করা হয়।
খবর সারাবেলা / ২৫ আগস্ট ২০২০ / এমএম