সহজে রক্তের সন্ধান দিতে লাইভ ব্লাড ব্যাংকের যাত্রা শুরু
সারাদেশে দ্রুততম সময় এবং জরুরি প্রয়োজনে রক্তের সন্ধান দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো ‘লাইভ ব্লাড ব্যাংক’ অ্যাপ ।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে এই অ্যাপটির উদ্বোধন করেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে আইসিটি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় তৈরি হয়েছে অ্যাপটি। যা পরিচালনা করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং ডাকসু।
তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অ্যাপটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পলক বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে একজন মানুষও যেন রক্তের অভাবে মৃত্যু বরণ না করে সেই প্রত্যয় বাস্তবায়নে ছাত্রলীগ এগিয়ে আসবে, রক্ত দিয়ে মানুষদের বাঁচাবে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রতি এই লাইভ ব্লাড ব্যাংক অ্যাপটিকে সফল করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ডিজিটাল যুদ্ধে দেশ বিরোধী চক্র ও চক্রান্তকে পরাজিত করে ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ে তোলা হবে। হ্যালো ছাত্রলীগসহ গণমানুষের সেবায় ছাত্রলীগের বিভিন্ন উদ্যোগে সব রকম সহযোগিতা করবেন তিনি।
এ সময় রক্তদানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেন পলক। এরপর মোবাইলে লাইভ ব্লাড ব্যাংক অ্যাপটি ডাউনলোড করে দেখান ও অ্যাপটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
পলক জানান, অ্যাপটি এখন অ্যাড্রয়েন্ডে ডাউনলোড করা যাবে। কয়েক মাসের মধ্যে আইওএসে চলে আসবে। এছাড়া ফেইসবুক-টুইটারে ইন্টারফেস করে দেয়া হবে, সেখান হতেও সরাসরি নিবন্ধন করা যাবে।
অ্যাপটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সাম্পাদক এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) সমম্বয়ক তন্ময় আহমেদ।
তিনি বলেন, ছাত্রলীগ কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কীভাবে কাজ করা যায়, অনলাইনে বিভিন্ন কনটেন্ট, টিউটোরিয়াল-ম্যাটেরিয়াল তৈরি করাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও প্রযোজনীয় বিষয় থাকতে পারে ।
এসব প্রশিক্ষণে সিআরআই সহযোগিতা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের ১০ হতে ১২ লাখ কর্মীর একটি দল সাইবার যোদ্ধা হিসেবে কাজ করতে পারে।
‘এখন সবাই ফেইসবুকে এক্টিভ, এটাকে কাজে লাগাতে হবে। যখন গুজব আসে তখন কাউন্টার দিতে হবে। পদ্মা সেতুতে মাথা লাগছে গুজব ছড়িয়ে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে। তখন সবাই মিলে কাজ করলে এসব গুজব প্রতিহত করা সহজ হবে’ বলছিলেন তন্ময়।
অনলাইন মাধ্যমে কীভবে দেশের, সরকারের ও মানুষের উপকার করা যায় সেটিতে সবােইকে গুরুত্ব দিতে বলেন সিআরআইয়ের এই সমন্বয়ক।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)’র জিএস গোলাম রাব্বানী তার বক্তব্যে বলেন, লাইভ ব্লাড ব্যাংকটির পরিচালনায় রয়েছে ছাত্রলীগ এবং ডাকসু। এটি সারা দেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সব ইউনিয়নে এক যোগে যেন ম্যাসিভ ডাউনলোড হয় এবং সবচেয়ে বড় ইন্টারেক্টিভ ব্লাড ব্যাংক হয় সেটি বাস্তবায়নে কাজ করবে ছাত্রলীগ ।
ছাত্রলীগের উপ-তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক ও স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপের সমন্বয়ক আশিকুর রহমান রুপকের সঞ্চালনায় এই ব্লাড ব্যাংক উম্মোচন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ছাত্রলীগের নেতারা।
অনুষ্ঠানে দেশের দেশের তথ্যপ্রযুক্তি সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিসহ ছাত্রলীগের সাবেক- বর্তমান নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
লাইভ ব্লাড ব্যাংক যেভাবে কাজ করবে :
লাইভ ব্লাড ব্যাংক হল রক্তদাতা ও গ্রহীতার জন্য একটি দ্রুত, সহজ এবং নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম। এই অ্যাপ ব্যবহার করে আপনি যেকোনো সময় জরুরী রক্তের জন্য অনুরোধ করতে পারেন। আপনার রক্তের অনুরোধটি ব্লাড গ্রুপ অনুযায়ী সঙ্গে সঙ্গে নিকটস্থ রক্ত দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হবে।
যিনি বা যারা আপনার অনুরোধটি গ্রহণ করবেন তার ছবি, নাম ও মোবাইল নম্বর আপনার অ্যাপে চলে আসবে। এভাবেই আপনি খুব সহজে প্রকৃত রক্তদাতা খুঁজে পাবেন এবং আপনার জরুরী রক্তের চাহিদা পূরণ হবে।
এছাড়াও এতে রয়েছে ডোনার ম্যাপ, ব্লাড ডোনার ম্যাপ, কাছাকাছি ব্লাড ব্যাংকসহ বিভিন্ন ফিচার । রয়েছে নিউজ ফিড যেখানে এ সংক্রান্ত কার্যক্রমগুলো দেখা যাবে।
ইতোমধ্যেই প্লেস্টোরে অ্যাপটির বেটা ভার্সন ৫ হাজারের বেশি ডাউনলোড হয়েছে। রক্তদাতা নিবন্ধন হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার। প্রায় তের’শ বার অ্যাপটি রক্ত চাওয়া হয়েছে আর এই অ্যাপ যোগাযোগ রক্তদান হয়েছে ৫’শ এর বেশি।
এই ঠিকানা থেকে অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণের অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে।
খবর সারাবেলা/ ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ টি আই
 
                                 
			
         


 
				 
				 
				 
				 
				



