সময় বেঁধে দিয়ে তার অপসারণ বন্ধ

October 18, 2020

রাজধানীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত তার অপসারণ অভিযান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। পাশাপাশি ইন্টারনেট ও কেবল টিভির ঝুলন্ত তার মাটির নিচে প্রতিস্থাপনে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানকে নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।

রোববার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা দক্ষিণের নগরভবনে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) ও কেবল অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) নেতাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত আসে।

তারের জঞ্জাল থেকে ঢাকা শহরকে মুক্ত রাখতে যৌথভাবে কাজ করার ঐক্যমত জানিয়ে বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে মেয়র তাপস বলেন, দক্ষিণ সিটির পক্ষ থেকে রাস্তায় কোনো ঝুলন্ত তার আজকের পর থেকে কাটা হবে না। আমাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তারা নিজ খরচে মাটির নিচ দিয়ে তারের সংযোগ নেবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে উপরে ঝুলন্ত তার কেটে দেবেন। আর এটা আগামী নভেম্বরের মধ্যেই তারা শেষ করবেন বলে আমাদের কমিটমেন্ট দিয়েছেন।

ঝুলন্ত তার সরিয়ে মাটির নিচ দিয়ে নিতে সিটি করপোরেশনের রাস্তা খোঁড়ারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘বিনা খরচে, অর্থাৎ বিনামূল্যে আমরা সেটা করার সুযোগ তাদের দিচ্ছি। আমাদের মধ্যে কিছু দ্বিমত ছিলো, কিন্তু বৃহত্তর স্বার্থে সব রকম ছাড় দিয়েছি। এমন কী সড়ক খোঁড়ার পর মেরামতের কাজও আমরাই করে দেব।

সিদ্ধান্তের পর আইএসপিএবি সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, আজকে থেকেই আমরা ঝুলন্ত তার নামিয়ে মাটির নিচে সংযোগের কাজ শুরু করে দেব। আশা করি নভেম্বরের মধ্যেই পারব।জানতে চাইলে এ বাবদ গ্রাহকদের ফি বাড়ানো হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগের খরচেই সংযোগ রাখতে পারব।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ঝুলন্ত তারের জঞ্জাল সরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে যে অভিযান গতমাসে শুরু হয়েছিল, তা বন্ধের দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল আইএসপিএবি ও কোয়াব। বিকল্প ব্যবস্থা না করে তার অপসারণের কাজ বন্ধ না করলে রোববার থেকে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত সারা দেশে ইন্টারনেট ও কেবল টিভি সেবা বন্ধের ঘোষণা ছিল তাদের।

তাদের এই ঘোষণায় উদ্বেগ জানিয়েছিলেন ব্যাংক খাতের কর্মকর্তারা। বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষও তাদের অনলাইন ক্লাসের সময় পাল্টে সকালের বদলে রাতে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে শনিবার বিকালে আইএসপিএবির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জাব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক।

সেই বৈঠকে মন্ত্রীর আশ্বাস মেলার পর ‘আপাতত’ কর্মসূচি স্থগিত করার কথা জানিয়েছিলেন আইএসপিএবি সভাপতি আবদুল হাকিম। আর রোববার দক্ষিণের মেয়রের সঙ্গে তাদের বৈঠকের পর সমঝোতার ঘোষণা আসে।

আইএসপিএবি ও কোয়াব নেতাদের সঙ্গে আসা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী ওই বৈঠকের সময় নগর ভবনের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে তাদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আমাদের সকল ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে, আপনাদের তার আপনারাই সরাবেন। সিটি করপোরেশন কোনো তার সরাবে না।

এদিকে ২০২১ সালের মধ্যে ঢাকাবাসীকে তারের জঞ্জালমুক্ত শহর উপহার দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তাপস বলেন, আমাদের যত ধরনের সহযোগিতা দরকার আমরা তা করব। আমরা আশা করছি ২০২১ সালে ঢাকাবাসীকে তারের জঞ্জালমুক্ত শহর উপহার দিতে পারব।

খবর সারাবেলা / ১৮ অক্টোবর ২০২০ / এমএম