শ্বশুরের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন রিয়াজ
নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার ময়নাতদন্ত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রিয়াজ। এরপর হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় তিনি কথা বলেন সাংবাদকিদের সঙ্গে।
অভিনেতার কাছে জানতে চাওয়া হয়, তার শ্বশুরের আত্মহত্যা ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার কারণ। জবাবে নায়ক কিছুই বলেননি। কাঁদতে কাঁদতে জানান, তিনি খুবই ভেঙে পড়েছেন। এরপর বলেন, ‘সবাই আমার শ্বশুরের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন উনাকে মাফ করে দেন। আর কিছু বলতে পারছি না।’
মহসিন খান ধানমন্ডি ৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতেন। স্ত্রী থাকেন তার বড় ছেলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায়। বুধবার রাত সোয়া নয়টার দিকে ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন মহসিন খান।
আত্মহত্যার আগে ফেসবুক লাইভে তিনি বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলেন। তার কথায়, ‘আমি ক্যানসারে আক্রান্ত। আমার ব্যবসা এখন বন্ধ। আমি বাসায় একাই থাকি। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমার ভয় করে যে আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামেলিকে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামেলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন, তাদের সাথে এটাই শেষ দেখা। সবাই ভালো থাকবেন।’
এরপর কালেমা পড়তে পড়তে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন মহসিন। তার আগে পিস্তলের লাইসেন্স দেখান। বলেন, ‘আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে। আমি চলে যাবো। আত্মীয় স্বজন যারা আছো, যেহেতু বাবাও আমাকে জায়গাটা দেয়নি, আমি যে কবরস্থানটা করেছি সেখানে আমাকে দাফন করো না। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে একটি কবরস্থান হয়েছে, সেখানে তোমরা আমাকে দাফন করে দিও। প্রত্যেকটা লোক আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমার বাবা, মা, ভাইরা, প্রত্যেকটা লোক, এভরিওয়ান।’ব্যবসায়ী মহসিন চেয়ারে বসে ফেসবুক লাইভে কথা বলছিলেন। তার সামনে টেবিল ছিল। সেখানে কাফনের কাপড় রাখা ছিল। তার পাশে ছিল একটা চিরকুট। সেখানে লিখে যান, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।
খবর সারাবেলা / ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ / এমএম
