রাশেদ রেহমানের দুটি অণুগল্প
হিজল ডাঙা
প্রিয় বন্ধু,
পরের চিঠিতে কুশল জানিও। বাদ সমাচার, ভালো থাকায় সচেষ্ট থাকি প্রিয়। দীর্ঘদিন স্বজন বিয়োগে মনটা শুধুই পালাইপালাই করছে। দারিদ্র্যতার এই স্বল্পায়ুর দেশে মানুষ আর ক’দিন বাঁচে বলো? ব্যস্ততার যাঁতাকলে পদপিষ্ট আমরা ভুলে থাকি শিকড়ের মায়া।
মনে আছে তোমার- স্কুলে একটু ছুটির ঘ্রাণ নাকে এলেই দুজনে হারিয়ে যেতাম দূরে- কোনো শহরে- দু’দশ দিনের জন্য? তুমি প্রেম করতে মামাতো বোন লাভলীর সঙ্গে- আমি ছিলাম রানার। বিশেষ কারণও ছিল তার; লাভলীর কনিষ্ঠ বোন লিজকে ভীষণ ভালোলাগত আমার। কৃষ্ণবর্ণা এই মেয়েটি রূপে নয়- গুণেই মন কেড়েছিল। ওর তীক্ষ্ণবুদ্ধি চোখ দেখেই বুঝে নিতো অব্যক্ত ভাষা। মামা বাড়ি থেকে ফেরার সময় যতদূর গোচরীভ‚ত হয়- ওরা থাকতো দৃষ্টিসীমায়।
হঠাৎ যেদিন খবর এলো লাভলীর বিয়ে হয়ে গেছে- তোমার সে কী কান্না! জন্মের কান্না কেঁদেছিলাম দুজন। জীবিকার প্রয়োজনে- যোজন যোজন দূরে এখন দুজনে। শুনেছি লিজার সাথেও পরে সম্পর্ক হয়েছিল তোমার- যা টেকেনি। আজ না হয় থাক- আহত স্মৃতি রোমন্থন, কী লাভ বাড়িয়ে বলো ব্যথার দহন? ভালো থেকো সতত প্রিয়জন নিরজন। উপরের ঠিকানায় চিঠি দিও।
তোমার বন্ধু
বাঁদরকে আদর দিতে নেই
ভাদর রাজার ছিল এক বাঁদর। রাজা নিজেই বানরের যতœআত্তি ও খাদ্যাদির ব্যবস্থা করতেন। প্রত্যহ আহার্য শেষে বানরের পশ্চাৎদেশে সজোরে বেত্রাঘাত করতেন। বিষয়ান্তর অবলোকন হেতু রানীর অহেতুক বানরের প্রতি এহেন আচরণের কারণ জানতে চাইলে রাজা অপেক্ষা করতে বললেন। পরদিন ভোজনপর্ব শেষে বানর রাজার গা ঘেঁষে বসে বেত হাতে নিয়ে রানীকে ভেংচি কাটল। রাজার মাথার উকুন বেছে, পানির পাত্র ভেঙে চলে গেল।
দ্বিতীয় দিনের ভোজনোৎসব চলছিল। বানর তার স্বভাবজাত আচরণে লম্ফঝম্ফ করছিল। রাজা আসন গ্রহণ করতেই- লম্ফ দিয়ে ঘাড়েগর্দানে উঠে বসল। রাজা রাগ না হওয়াতে বানর উকুনবাছা শেষে মাথায় বসে মল ত্যাগ করে তাকিয়ে রইল!!
রাজা ক্ষেপে গেলেন সেই!
রানী বলল; বাঁদরকে আদর দিতে নেই!!!
খবর সারাবেলা / ১১ জুলাই ২০২০ / এমএম