রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীর তৈরি রেসিং কার যাচ্ছে জাপানে

September 2, 2019

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক- শিক্ষার্থীর তৈরি করা রেসিং কার যাচ্ছে জাপানের একটি প্রতিযোগিতায়। শিক্ষার্থীরা তাদের দলের নাম দিয়েছে টিম ক্রাক প্লাটুন।

টিম ক্রাক প্লাটুনের সদস্যরা ২০১৭ সালে ওয়ালটনের দেওয়া ইঞ্জিন দিয়ে ফর্মুলা রেসিং কারের নকশা তৈরি করে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার।

এ বছর তারা প্রথম বারের মতো ইলেকট্রিক কার তৈরি করে, এই গাড়ির কিছু অংশ তারা ভারত থেকে এনেছে এবং অন্য সার্কিটগুলো নিজেরাই তৈরি করেছে।

টিম ক্র্যাক প্লাটুন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটি অটোমোটিভ টিম, যাদের উদ্দেশ্য অটোমোবাইল ক্ষেত্রে গবেষণা, উন্নয়ন এবং যান উৎপাদন। এ যাবৎ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তারা অংশগ্রহণ ও স্বীকৃতিলাভ করেছে, তার মাঝে উল্লেখযোগ্য ২০১৬ সালে ভারতের তামিলনাড়ুতে অনুষ্ঠিত ‘ÔQuadbike Design Challenge 2016Õ (Best Passionate Team)) এবং ২০১৭ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত ‘AbzwôZ ÔStudent Formula Japan 2017Õ’ প্রতিযোগিতা। ফর্মুলা রেসিং কার ডিজাইন, নির্মাণ করা এবং বিজনেস কোম্পানি হিসেবে তার বাজারজাতকরণ পরিকল্পনা প্রদর্শনের এই বিশ্ববরেণ্য প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম দল হিসেবে অংশ নিতে তারা ফর্মুলা রেসিং কার তৈরী করে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার।

সাফল্যের ধারাবাহিকতায় টিম ক্র্যাক পাটুন অংশগ্রহণ করতে চলেছে ‘ÔFormula SAE Japan 2019’ প্রতিযোগিতায়, ই.ভি. ক্লাসে। বিশ্বের মোট ৬টি দেশের ২৭টি দলের একটি হিসেবে চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছে তারা, যেখানে অংশ নিচ্ছে মোট ১০৭টি দল।

এই প্রজেক্টের জন্য তাদের লক্ষ্য ছিল ভবিষ্যৎমুখী। এ বিষয়ে টিম মেম্বার জাহিদ হাসান বলেন, ‘জ্বালানী-নির্ভর গাড়ির ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে বৈদ্যুতিক যাননির্ভর আগামীর প্রয়োজনে, আমরা তৈরী করেছি স্টুডেন্ট ফর্মুলা ইলেকট্রিক ভেহিকল। এটি দেয় নিরাপদ ও দূষণমুক্ত যানব্যবস্থা।’ উল্লেখ্য, বিদ্যুৎচালিত ফর্মুলা কার বাংলাদেশে এটিই প্রথম তৈরী হলো, এই টিমের হাতে।

২৭-৩১ আগস্ট জাপানে হতে যাওয়া এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত টিম ক্র্যাক প্লাটুন, তবুও রয়ে গিয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা। বিজনেস টিম মেম্বার নাজমুল হাসান সুমন জানান, ‘গাড়িটির শিপমেন্ট এবং প্রতিযোগীদের বিমানভাড়া বাবদ প্রায় বিশ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। যদি এক সপ্তাহের মধ্যে অন্তত শিপমেন্টের পাঁচ লক্ষ টাকার বন্দোবস্ত না হয়, তাহলে আমাদের গাড়ি পাঠানো কঠিন হয়ে যাবে।’

বিগত প্রতিযোগিতা এবং বর্তমান প্রজেক্ট নিয়ে কথা হয়েছিল টিম ক্যাপ্টেন মো. তানভীর শাহারিয়ার উৎসের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এবারের প্রজেক্টটি প্রতিযোগীদের মাঝে সম্মানজনক অবস্থানেই থাকবে। তবে এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন টাইটেল স্পন্সর নিশ্চিত করা, যাতে করে আমরা গাড়ির শিপমেন্ট এবং প্রতিযোগিদের বিমানভাড়ার ব্যয় বহন করতে পারি।’

Formula Student Japan২০১৯ প্রতিযোগিতার প্রজেক্টের জন্য এ পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে তাদের স্পন্সর হিসেবে ছিল প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং Ges Advanced Dynamics। এছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে স্পন্সর করেছেন জার্মানিভিত্তিক কোম্পানি ‘Bender GmbH & Co. KG’, এবং সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি ‘Mezer Products, LLC’।

২০১৭ সালের প্রজেক্টেও টাইটেল স্পন্সর হিসেবে তাদেরকে সাহায্য করেছেন Runner Automobiles। এছাড়াও আনুষঙ্গিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সহায়তা করেছে Walton bd, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হওয়ার পেছনে তাদের অবদান এই টিমের কাছে অনস্বীকার্য।

ছাত্রদের ফর্মুলা কার নির্মাণের এই বিশ্ববরেণ্য প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে দেশের যেকোনো আগ্রহী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অবদান প্রত্যাশা করছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই দলটি।

খবর সারাবেলা/ ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ টি আই