বেড়েছে রেললাইনের তাপমাত্রা, দিনের প্রথম ৬ ঘণ্টা গতি কমানোর নির্দেশ
বৈশাখের প্রথম দিকেই রাজধানীতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে। দেশজুড়ে বৈশাখের এই গরমে রেললাইনগুলোতে তাপমাত্রা বেড়েছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি। তাপমাত্রা বাড়ায় লাইন বেঁকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের। দেশের বিভিন্ন স্থান ও রেললাইনের বয়সের কথা মাথায় রেখে গতি কমিয়ে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানোর নির্দেশনা দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
বিগত অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও বৈশাখের এই গরমের সময় এ ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। দিনের প্রথম ভাগে সকাল ১১ টাকা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত গতি কমাতে বলা হয়েছে। কারণ, এই সময়টাতেই রেললাইন বেশি গরম হয়। এই নির্দেশনাকে স্ট্যান্ডিং অর্ডার বা স্থায়ী আদেশ বলা হয় রেলের ভাষায়।
পৃথিবীর তাপমাত্রার চেয়ে রেললাইনে ১০ বা ১২ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা থাকে। রেললাইনের তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র রয়েছে মাঠপর্যায়ের রেলের কর্মীদের কাছে। যন্ত্রে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেলেই গতি কমানোর নির্দেশনা আসে। এই তাপমাত্রায় নতুন লাইন বেঁকে যায়। লোহার পাত জোড়া দিয়ে দিয়ে সমান্তরাল রেললাইন বসানো হয়। জোড়াগুলোর জায়গাতে সামান্য ফাঁকা রাখা হয়। যাতে তাপে লোহার সম্প্রসারণ হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। কিন্তু অত্যাধিক তাপে সম্প্রসারণ বেশি হয়ে গেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
রেলওয়ের টঙ্গী জংশন স্টেশনের মাস্টারের গত মঙ্গলবারের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ওই দিন রেলপথের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পাওয়া গেছে। এ জন্য জনস্বার্থে টঙ্গী থেকে নরসিংদী এবং টঙ্গী থেকে গাজীপুরের শ্রীপুর অংশে আসা-যাওয়ার সব ধরনের ট্রেন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করবে। একইভাবে সারা দেশে নিজ নিজ অঞ্চলের কর্মকর্তারা তাপমাত্রা মেপে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত বা গোটা রেলপথে গতিসীমা আরোপ করেছে।
রেলের পূর্বাঞ্চলসহ (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) লালমনিরহাট অঞ্চলে মিটারগেজ রেললাইন। এসব লাইনে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে। আর পশ্চিমাঞ্চলে (রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের একাংশ) ব্রডগেজ রেললাইন। এসব স্থানে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে। মালবাহী ও লোকাল ট্রেনগুলোর গতি কম থাকে। আর আন্তনগর ট্রেনের গতি বেশি।
রেলওয়ের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা সরদার সাহাদাত আলী বলেন, গরমে সতর্কতার অংশ হিসেবে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এবারও সারা দেশের পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া রেলের কর্মীদের রেললাইনের তাপমাত্রা পরীক্ষা করাসহ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
খবর সারাবেলা / ১৭ এপ্রিল ২০২৪ / এমএম