নিউইয়র্কে করোনায় বাংলাদেশ সোসাইটির নেতার মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এবার মারা গেলেন বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী সদস্য মো. আজাদ বাকির (৫৮)। স্থানীয় সময় সোমবার ভোররাত পৌনে চারটায় নিউইয়র্কের কুইন্সের এলমহার্স্ট হাসপাতালে মারা যান তিনি। গত আট দিন ধরে তিনি ওই হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার দু’টি কিডনিই বিকল হয়ে যায়। তিনি হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছিলেন।

আজাদ বাকির নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস এলাকায় বসবাস করতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। ছেলে রোহান তার বাবার মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন।আজাদ বাকিরের মৃত্যুর মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগে একই হাসপাতালে করোনা ভাইরাসে মারা যান বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ। বুধবার তার মরদেহ দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।

আজাদ বাকির যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরেও নানান সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন আজাদ বাকির। কুমিল্লার কৃতি সন্তান আজাদ বাকির নিউইয়র্কে বৃহত্তর কুমিল্লার সোসাইটির সাবকে সভাপতি।কমিউনিটিতে খুব জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। নিউইয়র্কে সোনালী এক্সচেঞ্জে কর্মরত ছিলেন আজাদ বাকির। রাজনৈতিক কারণে তিনি চাকরি হারান।

বাংলাদেশ সোসাইটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিকা রায় চৌধুরী জানান, হাসপাতালে যাওয়ার আগেও আজাদ বাকির আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমার জরুরি কিছু লাগবে কী না। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আমাকে সাবধানেও থাকতে বলেছিলেন তিনি।মনিকা রায় বলেন, যিনি আমাকে সাবধানে থাকতে বললেন, তিনিই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আমরা একই সংগঠনের দু’জনকে হারালাম। এ শোক কাটিয়ে ওঠা বড় কঠিন।

বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ সাদী মিন্টু জানান, আমাদের সংগঠনের সভাপতি কামাল আহমেদের চলে যাওয়ার ব্যথা ভুলতে পারলাম না। আবার আজাদ বাকিরের অকালে চলে যাওয়া আমরা ভুলবো কী করে?তিনি বলেন, আজাদ বাকির সত্যিকারের একজন পরোপকারী ব্যক্তি ছিলেন। তার দাফনের ব্যাপারে এখনো কোনো নিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান সাদী মিন্টু।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মৃত্যুর তালিকা যত সময় যাচ্ছে ততই দীর্ঘ হচ্ছে। স্থানীয় সময় ৬ এপ্রিল সোমবার সকাল পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ৭৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।আক্রান্তের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান কারোই জানা নেই। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

খবর সারাবেলা / ০৭ এপ্রিল ২০২০ / এমএম