নারী দিবসে থাকুন বিশেষ হয়ে
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। জাতিসংঘ প্রতিবছর দিনটির একটি প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে দেয় যেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র ও সংস্থাগুলো নারীর উন্নয়ন-অগ্রগতি বিষয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথরেখা নির্ধারণ করতে পারে। এ বছরের প্রতিপাদ্যের মূল বিষয় ‘নারীর ওপর বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও নারীকে অর্থনীতিকে অন্তর্ভূক্তিকরণ’। নারীর ওপর বিনিয়োগ শুধু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়। নারীর ওপর সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিনিয়োগও সমভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে নারীর নিজের আত্নবিশ্বাস প্রকাশ জরুরি। নারী দিবসে নিজের অধিকারকে ভালোভাবে উপলব্ধি করে সে বিষয়ে সোচ্চার হওয়ারও বিকল্প নেই। এজন্য দিবসটিকে উদযাপনের বিকল্প নেই।
নারী দিবসে এক নারী অপর নারীকে শ্রদ্ধা জানাবেন। পুরুষদেরও দিনটিতে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা বাড়াতে হবে। তবে নারীই এই দিনটি উদযাপন করবেন ভালোভাবে। এক নারী অন্য নারীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে উদযাপন করতে পারে এই বিশেষ দিনটি। হোক না সে আপনার মেয়ে, কিংবা তিনি আপনার মা বা বয়জ্যেষ্ঠ কেউ, হোক না তিনি আপনার বান্ধবী, কিংবা সহকর্মী। নারী দিবসের উদযাপনে সকলে মিলে নারীকে আরও কাছ থেকে বুঝে ওঠার চেষ্টা নিয়ে এই বিশেষ দিন উদযাপন হোক। কিন্তু কীভাবেই বা করবেন এই উদযাপন? ভাবনাটি জটিল। তবে অত জটিল না। দিনটিকে বিচিত্র করার রয়েছে অনেক আইডিয়া। তারই কিছু উপস্থাপন করছি আপনাদের সামনে।
অফিসে কর্মরত হলেও থাকুক বিশেষ দিন
অফিসে কর্মরত? খুব ব্যস্ত থাকেন অফিসে? ব্যস্ততার মধ্যেও নারী দিবসের জন্য সামান্য একটু সময় বের করে নিন। অন্য নারী সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অফিসেই বিশেষ ভিডিও রিল বানিয়ে ফেলুন। আপলোড করে তাদের চমকে দিতে পারেন। আপনি যে তাদের শ্রদ্ধা করেন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো যাবে। তাছাড়া নারী দিবসে অনেকের কাছে আপনি গুডউইল পৌঁছে দিতে পারবেন। শুধু অফিসেই নয় বাড়ির নারী সদস্যদের জন্যও করতে পারেন একই রকমের বিশেষ ভিডিও রিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই সুবিধাটুকু নেবেন না কেন?
বিশেষ উদযাপন করা যায়
নারী দিবস তো আপনার। আর নারী হিসেবে বিশেষ উদযাপনে অন্য নারীকে শামিল করে নিতে পারলে খারাপ হয় না। নারী দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে পিছপা হবেন না। মাতৃস্থানীয়দেরও এই উদযাপনে সামিল করে তাদের বিশেষ বার্তা দিয়ে চমকে দিতে পারেন। কেউ না জানলে তাদের দিনটির গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করুন। হয়তো আপনার কাছে তেমন কিছুই নেই বলার। তারপরও আয়োজনে শামিল করুন অনেককে। আলোচনা করুন। ছোট ছোট এই উপলক্ষ্যই তো সব।
নারী সংস্থার দিকে মনোযোগ দিতে পারেন
নারীর অর্থনৈতিক অন্তর্ভূক্তিকরণের ক্ষেত্রে নারী সংস্থারও রয়েছে বাড়তি গুরুত্ব। নারী দিবসে আপনি এমন সংস্থার খোজ নিন। তাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে জানুন। যদি তাদের কোনো ফান্ডিং প্রোগ্রাম থাকে যুক্ত হোন। এমনকি নিজেও অংশ নিন। ফান্ডিং করাটাই যে মুখ্য উদ্দেশ্য তা নয়। নারী সংস্থার সঙ্গে সহযোগী হয়ে আপনি অন্য নারীর সুবিধা নিশ্চিত করার কাজও করতে পারবেন। এভাবে নারীদের মেলবন্ধন গড়ে তোলার সুযোগ হাতছাড়া করবেন কেন? কোনও নারী দ্বারা পরিচালিত এনজিওকে সাহায্য করতে পারেন আপনার মতো করে। মূল কথা, সামাজিক পর্যায়ে নারীর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগটিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা বাড়ানো জরুরি।
পরিবারে সময় দিন
মা পরিবারের ছায়া হয়েই বাঁচেন। থাকেন আপনার জীবনে। শুধু নারীর জন্য নয়, পুরুষের জন্যও নারী দিবস তাই প্রাসঙ্গিক। তবে নারী হিসেবে নিজের মায়ের সঙ্গে সময় কাটানোর রয়েছে আলাদা গুরুত্ব। তাকে নারী দিবস সম্পর্কে জানান। তাকে বিশেষ উপভোগ করান। তারা যেন বুঝতে পারেন তারা বিশেষ। নিদেন পক্ষে সারাদিনের কাজ সেরে মায়ের সঙ্গে রান্নাঘরেই নয় কিছুটা সময় কাটিয়ে দিলেন। হল কিছুটা খোশ গল্প, মাও পেলেন সন্তানের সঙ্গ!
চমকে দিন
বিশেষ এই দিনে মা হোন বা বোন, স্ত্রী হোন বা প্রেমিকা, কিংবা বান্ধবী, যে কাউকে চমকে দিতে নিজে কিছু রান্না করে পদ পরিবেশন করতে পারেন। নিজের এই বিশেষ দিনে আপনাকে অপরজন সারপ্রাইজ দিলো কি-না সেটি মুখ্য নয়। বরং আপনি অন্যদের সচেতন করুন। নারীর অন্তর্ভূক্তিকরণের ক্ষেত্রে এই প্রচেষ্টাও প্রীতিকর হোক।
জানান নিজের ঘটনা
আপনার জীবনে কিছু না কিছু তো ঘটেছে। নারী দিবসে সচেতনতা বাড়ানোর অংশ হিসেবে নিজের জীবনের ঘটনাই জানান। নিজের জীবনে বলার মতো কিছু নেই? তাহলে আপনার জানা কারো কথাই বলুন। বলতে পারেন কোনো বইয়ের কথা। ঘটনার কথা, গল্পের কথা। নারীকে কুর্নিশ জানিয়ে আপনার তরফে বলা কথাগুলো কত প্রাসঙ্গিক হয়ে ধরা দেবে তা ভেবে দেখুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করুন। অনেকে যেন আপনার কথাটি জানতে পারেন সে সুযোগ নিন। নারী দিবসে থাকুন বিশেষ হয়ে। নিজেকে বিশেষ করেই থাকুন বিশেষ।
খবর সারাবেলা / ০৮ মার্চ ২০২৪ / এমএম
 
                                 
			
          
				 
				 
				 
				 
				



