দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সকাল নয়টার দিকে জেলায় দেশের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে এখনও মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। এসব জেলায় চলতি মাসের (জানুয়ারি) মধ্যভাগে আরও শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ইত্তেফাককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান।
এর আগে সকাল সাতটার দিকে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কুড়িগ্রামে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সকাল ছয়টার দিকে পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নির্ণীত হয়। তখন জেলার তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আজ বুধবার সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। দিনে কুয়াশা কমে রোদের দেখা পাওয়া গেলেও সন্ধ্যার পর শীত আরও বাড়তে পারে।
এদিকে দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে তাপমাত্রা কমে ও কুয়াশা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ঠাণ্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে। এতে শীতের অনুভূতি ও কষ্ট বেড়ে গেছে। কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌপথে চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিমান চলাচলেও প্রতিবন্ধকতা দেখা দিয়েছে। এই আবহাওয়া আগামীকাল বৃহস্পতিবারও বিরাজ করতে পারে।
পঞ্চগড়ে নিম্ন-আয়ের লোকজনের ভোগান্তি চরমে পঞ্চগড়ে শীতের দাপটে জনজীবনে দেখা দিয়েছে বিড়ম্বনা। দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের লোকজন। মঙ্গলবার রাত থেকেই বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। কনকনে ঠাণ্ডার মধ্যেই স্থানীয় শ্রমজীবীদের কর্মস্থলে যেতে দেখা গেছে। রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলছে।
শীতে পর্যুদস্ত কুড়িগ্রামবাসী
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, উত্তুরে ঠাণ্ডা বাতাস ও ঘন কুয়াশায় পর্যুদস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামবাসী। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে কনকনে ঠাণ্ডা আর বৃষ্টির মতো ঝরে পড়া কুয়াশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। ঘন কুয়াশার চাদরে প্রকৃতি ঢেকে থাকায় দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বলিয়ে চলছে গাড়ি।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শাহিনুর রহমান সরদার বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ৩৬৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৭১ জনই শিশু।’
শীতে দুর্ভোগ জনসাধারণের, উদ্বেগে কৃষকরা
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী সংবাদদাতা জানান, শীতের কারণে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বীজতলা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন কৃষকরা। সুবলপাড়ের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ঘন কুয়াশায় ইরি ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রক্ষার চেষ্টায় প্রতিদিন সকালে বীজতলা থেকে শিশির ছাড়িয়ে দিতে হচ্ছে।’
হোটেল কর্মী মোফাজ্বল হোসেন বলেন, ‘সারারাত কনকনে ঠাণ্ডা ছিল। দিনের বেলায়ও একই অবস্থা। এ অবস্থায় আমার মতো খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের শেষ নেই। কাজ না করে ঘরে বসে থাকলে তো পেটে ভাত জুটবে না। তাই এ ঠাণ্ডায়ও হোটেলে কাজ করছি।’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এখন প্রতিদিন তাপমাত্রা কমে আসবে। ঘন কুয়াশার সাথে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে এই জেলায়।’
বৃষ্টির মতো কুয়াশা, কর্মজীবীদের দুর্ভোগ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী সংবাদদাতা জানান, দুই দিন ধরে উত্তুরে ঠাণ্ডা বাতাস বইতে থাকায় সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর ও ক্ষেতমজুরসহ কর্মজীবীরা। রাতে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। সকালে কর্মজীবী লোকজন চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলতে দেখা গেছে। কনকনে শীতে সবজি ক্ষেত ও বীজতলা নষ্টের আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। বিশেষ করে উদ্বেগে রয়েছেন বোরো চাষীরা।
৩ জেলায় শৈত্যপ্রবাহ
দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও নীলফামারী- এই ৩ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। এসব জেলায় আরও দুই দিন শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
৩ বিভাগে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত, ৩ বিভাগে কমেছে
রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহে গড় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত আছে।
বেড়েছে ২ বিভাগে, কমেছে ৩
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঢাকা ও সিলেট বিভাগে বেড়েছে এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামে কমেছে।
খবর সারাবেলা / ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ / এমএম