খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হচ্ছে না তো

কাটা, ধোয়া, সংরক্ষণ বা রান্নার ভুলে খাদ্যের পুষ্টিগুণ কিন্তু কমে যেতে পারে। যেমন কোনও কোনও আনাজ খোসা ছাড়ানোর পরে ধুলে কিংবা আমিষ খাবার উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বজায় থাকে না। কাজেই খাওয়ার আগে তার প্রসেসিং এবং রান্নার পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।

বজায় থাকুক পরিচ্ছন্নতা
করোনার সময়ে বাজার থেকে আনা শাকসবজি বা ফল অনেকেই নানা ভাবে পরিষ্কার করছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আস্ত অবস্থায় কলের পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিলেই সেটা খাওয়ার জন্য নিরাপদ।
ঠিকঠাক সংরক্ষণ

বাজার থেকে আনার পর ধুয়ে পানিসহ ফ্রিজে রাখবেন না সবজি। রান্নার আগে ধুয়ে ও কেটে নিলেই পুষ্টিগুণ থাকবে অক্ষুণ্ণ। কাঁচা মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে লবণ-হলুদ মাখিয়ে ফ্রিজে রাখতে পারেন। দুগ্ধজাত জিনিস কেনার পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। ফল তাজা অবস্থায় খাওয়াই ভালো।
রান্না হক সঠিক উপায়ে

কাঁচা ডিমের তুলনায় সেদ্ধ ডিমের প্রোটিন ১৮০ শতাংশ বেশি সহজপাচ্য। আবার ভিটামিন সি ও বি সমৃদ্ধ সবজি সেদ্ধ করলে তা হিট-সেনসিটিভ ও পানিতে দ্রাব্য হওয়ায় প্রায় ৫০ শতাংশ ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়। আবার অধিক তাপমাত্রায় অনেকক্ষণ ধরে তেলে কিছু ভাজলে বা তেলের পুনর্ব্যবহারে তৈরি হয় অ্যালডিহাইড, যা ডেকে আনতে পারে বিভিন্ন রোগ।

ব্রকোলি, লেটুস পালংয়ে থাকা ভিটামিন সি, সেদ্ধ করার পরে বেশির ভাগই নষ্ট হয়ে যায়। এগুলো তাই কাঁচা খেলে ভালো। নাহলে ভাপে সামান্য সেদ্ধ করে নিতে পারেন।

আমিষ পদের ক্ষেত্রে রান্নার সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাছ বেশি ভাজলে তার প্রোটিন ও ফ্যাটি অ্যাসিড দুই-ই নষ্ট হয়। ভাপিয়ে রান্না করা মাছে (বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ) ওমেগা থ্রির পরিমাণ ভাজা মাছের তুলনায় বেশি সংরক্ষিত হয়।

থায়ামিন, নিয়াসিন ও অন্যান্য ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশ খানিকটা নষ্ট হয় মাছ-মাংস গ্রিল বা রোস্ট করলে। যদিও মাইক্রোওয়েভে রান্না করলে আমিষ পদের গুণ অনেকটাই অক্ষুণ্ণ রাখা সম্ভব। আবার স’তে কিংবা স্টার ফ্রাই করলে কম সময়ে পানি ছাড়া রান্না হওয়ায় ভিটামিন বিসহ ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টসের অপচয় আটকানো যায়।

আরও কিছু টিপস

কম তাপমাত্রা আর কম পানি ব্যবহার করে রান্না করলে খাদ্যগুণ সবচেয়ে বেশি ধরে রাখা সম্ভব।
শাকসবজি যত ছোট করে কাটবেন, তত পুষ্টি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

ভাপে রান্না করার অভ্যাস করুন। সবজি সেদ্ধ করার পর পানিটুকু ফেলে না দিয়ে রান্নায় ব্যবহার করুন।
কাঁচা সালাদে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর পরিমাণ বেশি। খাওয়ার ঠিক আগে কাটুন সালাদ।
হলুদ, আদা, রসুন ইত্যাদি কাঁচা অবস্থায় খেলে এগুলোতে থাকা বিভিন্ন বায়োঅ্যাক্টিভ কম্পাউন্ড সরাসরি অবিকৃত অবস্থায় দেহে প্রবেশ করে।

খবর সারাবেলা / ০৭ অক্টোবর ২০২০ / এমএম