আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ২ পুলিশ গ্রেফতার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী পুলিশের গুলিতে নিহত আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য (এএসআই) মো. আমীর আলী ও সুজন চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাদেরকে পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, এই দুই সদস্য পুলিশ লাইনে নজর দারিতে ছিলেন। আজ তাদেরকে মহানগর পুলিশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তার বড় ভাই রমজান আলী বাদি হয়ে গত ১৮ আগস্ট মেট্রোপলিটন তাজহাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।এতে আসামি করা হয়েছে, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, ডিসি ক্রাইম আবু মারুফ হোসেন, পুলিশ সদস্য সৈয়দ আমীর
এর আগে, গত ৩ আগস্ট এই দুই পুলিশ সদস্য এএসআই আমীর আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন আবু সাঈদ। গত ১৬ জুলাই আবু সাঈদ নিরস্ত্র ও একা ছিলেন। তিনি দৃশ্যতে পুলিশের জন্য কোনো হুমকি ছিলেন না। তা সত্ত্বেও তাকে শটগান দিয়ে নির্মমভাবে গুলি করা হয়। আবু সাঈদ পড়ে গিয়ে একাধিকার দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে একাধিকার গুলি করেন।

এছাড়াও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন বেলা ২টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়ার নেতৃত্বে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। আবু সাঈদ পিছু না হটে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দিয়ে এগিয়ে যান। পুলিশের সামনে এ সময় প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান হেলমেট পরে এসে আবু সাঈদকে লক্ষ্য করে ‘গুলি করুন, গুলি করুন’ বলে নির্দেশ দেন। অপর দুই আসামি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক মশিউর রহমান ও আসাদুজ্জামান মণ্ডল পুলিশকে গুলি করতে প্ররোচিত করেন বলে উল্লেখ করা হয়। নিরস্ত্র আবু সাঈদকে পুলিশের গুলি করার ভিডিওটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে আবু সাঈদের বড় ভাই মামলার বাদী রমজান আলী বলেন, আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তার ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য মামলা করেছি। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই। যারাই অপরাধী, তাদের আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচার করতে হবে।

খবর সারাবেলা / ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ / এমএম