অনলাইনে আসছে কৃষকের বাজার
করোনা পরিস্থিতিতে কৃষিপণ্য বিপণনের জন্য চালু করা হচ্ছে অনলাইন বাজার। এটির নাম দেয়া হয়েছে ‘কৃষকের বাজার’ (krishokerbayar.gov.bd)। কোরবানির ঈদের আগেই এই মার্কেটপ্লেসটি উদ্বোধন করা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাজারটি মনিটরিং করবে কৃষি বিপণন অধিদফতর। একটি কল সেন্টারের মাধ্যমে এটি পরিচালনা করা হবে। এই অনলাইন বাজারের মাধ্যমে কৃষক থেকে শুরু করে আড়তদার ও সব ধরনের ক্রেতাকে একই প্ল্যাটফর্মে আনা হবে। কৃষি বিপণন অধিদফতর সূত্রে বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র আরও জানায়, এই অনলাইন মাধ্যমে কৃষক ও ব্যবসায়ী পণ্য বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। প্রতিশ্রুতিমতে, পণ্য সরবরাহ না করলে শাস্তির আওতায় আনা হবে কৃষক ও আড়তদারদের। এ ছাড়া অনেক নারী কৃষিপণ্য দিয়ে ঘরে বসে আচার, ঘিসহ অনেক পণ্য তৈরি করে। তবে নানা কারণে তারা তৈরিকৃত পণ্য বাজারে আনতে পারেন না। তাই তাদের এসব পণ্য বিপণন ও বিক্রির জন্য গুরুত্ব দেয়া হবে।
জানতে চাইলে কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কৃষিপণ্যে বিপণন ব্যবস্থার আধুনিকায়নে এই অনলাইন মার্কেটপ্লেসটি করা হচ্ছে। এখানে আমরা কৃষক, আড়তদার, ফড়িয়া ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে কাজ করছি। তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই মার্কেটটি সরাসরি মনিটর করবে কৃষি বিপণন অধিদফতর। এর পরিচালনায় একটি কল সেন্টার থাকবে। যেসব কৃষক সরাসরি পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন না, তারা কল সেন্টারে ফোন করলে স্থানীয় কৃষি অফিসাররা তাদেরকে এই সহযোগিতা করবে।
তিনি জানান, অনলাইন বাজারে পণ্য বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপনের আগে পণ্যের মান যাচাই-বাছাই করা হবে। এ ছাড়া কোল্ড স্টোরেজ তৈরি করে পণ্যের সংরক্ষণ, পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য নির্ধারিত গাইডলাইন তৈরি করা, সেন্ট্রাল পেমেন্ট সিস্টেম তৈরি করা এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের একটি শুদ্ধ ডেটাবেজ তৈরি করা করা হবে। বাজারটি উদ্বোধনের পর ধীরে ধীরে এসব কাজ শুরু করা হবে।
অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, পণ্য দিয়ে যে কোনো সংশয় দূর করতে পরীক্ষা করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। এ ছাড়া কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকারী নারী কর্মীদেরও এই পোর্টালে সংযুক্ত করা হবে। তিনি বলেন, অনেক নারীরাই ঘরে বসে আচার, ঘিসহ অনেক পণ্য তৈরি করে। তাদের পণ্যের মার্কেটিংয়ের জন্যও অনলাইনটিতে গুরুত্ব দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এটি দ্বিতীয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এ ছাড়া সম্প্রতি রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে ‘কৃষকের বাজার’ নামে একটি বাজার চালু করা হয়। যেখানে সরাসরি কৃষকরা তাদের পণ্য নিয়ে এসে বিক্রি করেন। এর আদলে প্রতিটি জেলাতেই কৃষকের বাজার গড়ে তোলার কথা ছিল।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে কৃষকের বাজারের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। সারা দেশে যখন সাধারণ ছুটি ছিল তখন কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারেননি। সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এর পরই সংশ্লিষ্টরা কৃষিপণ্যের বাজার ব্যবস্থার আধুনিকায়নের চিন্তা করেন। এই চিন্তা থেকেই অলনাইন বাজারটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
খবর সারাবেলা / ১১ জুলাই ২০২০ / এমএম