ডায়াবেটিক রোগীর ঈদে খাবারদাবার
ডায়াবেটিস হলো নিয়ন্ত্রণে রাখার রোগ। সারা বছর কিংবা কোনো উৎসব বা পার্বণে একজন ডায়াবেটিক ব্যক্তিকে অবশ্যই তাঁর ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকার মতো খাদ্য পরিকল্পনা বা বাছাই করতে হবে। তাই বলে এই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার যুদ্ধে এমন নয় যে আপনি বিশেষ কোনো দিনের বা ঈদের মজাদার খাবার থেকে বঞ্চিত হবেন। ঈদ মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।
তাই ঈদে নানা ধরনের মজাদার রান্নার সমাবেশ ঘটে আমাদের ঘরে। আর প্রতিটি ঘরেই এখন কেউ না কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাই ঈদের খাবারদাবার হবে একটু পরিকল্পিত। যেমন প্রথমেই বলব, ডায়াবেটিস হলো clock disease। তার মানে ঘড়ি ধরে সময়মতো ঈদের দিনও খেতে হবে আপনাকে।
– খেতে হবে পরিমিত। অর্থাৎ ঈদের মিষ্টিজাতীয় সেমাই, ফিরনি, জর্দাসহ পোলাউ, রোস্ট, কোর্মা, কাবাব—সবই আপনি খেতে পারবেন, তবে খেতে হবে পরিমাণে কম। যেন গুরুপাক না হয় এবং রক্তের গ্লুকোজও থাকে নিয়ন্ত্রণে।
– ডেজার্ট অর্থাৎ মিষ্টিজাতীয় খাবার তো খেতেই হবে, তাই ডায়াবেটিক রোগীর জন্য সম্ভব হলে আলাদা আর্টিফিশিয়াল সুইটনার দিয়ে ডেজার্ট বানাতে পারেন। কিংবা মিষ্টির পরিমাণ কম দিন। সকালে বা দুপুরের খাওয়ার পর ডেজার্ট খেতে হলে কার্বোহাইড্রেট বা ভাত/পোলাউয়ের পরিমাণ কমান। সালাদ ও সবজির আইটেম রাখুন মেন্যুতে।
– যাঁরা ইনসুলিন নিচ্ছেন তাঁদের সুবিধা হচ্ছে, প্রয়োজনে ইনসুলিনের ডোজ বাড়িয়ে নিতে পারেন। কিন্তু যাঁরা ওরাল ড্রাগ বা সুগার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাচ্ছেন তাঁদের অবশ্যই ২০ থেকে ৩০ মিনিট বাড়তি সময় হাঁটতে হবে।
– সারা দিনে ১ সার্ভিং কম মিষ্টি ও বেশি আঁশযুক্ত ফল রাখুন খাবার তালিকায়।
– একসঙ্গে বেশি খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ৬ থেকে ৭ বারে খাবার খান ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর পর।
ঈদের দিনেও চেষ্টা করুন ঘি, বাটার অয়েলের ব্যবহার বর্জন করতে। পর্যাপ্ত পানি পান করবেন। প্রয়োজনে খেতে পারেন চিনি ছাড়া লাচ্ছি, মাঠা, ফলের জুস কিংবা লেবুর শরবত।
লেখক : সিনিয়র নিউট্রিশনিস্ট, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল শাহবাগ, ঢাকা
খবর সারাবেলা / ০১ মে ২০২২ / এমএম